"কচুর লতি পাতুরি" আদতে পূর্ববঙ্গের একটা রান্না। ওপার বাংলায় কচুর লতি রান্নার নানারকম পদ্ধতি আছে যার মধ্যে লতি ভাজা থেকে শুরু করে লতি পাতুরি, চিংড়ি/লইট্যা-শুঁটকি/ ইলিশের মুড়ো/কাতলার মুড়ো দিয়ে রাঁধা লতি বেশ জনপ্রিয় খাবার। বাঙ্গাল বাড়ির মেয়ে হওয়ায় আমি ছোটবেলা থেকেই মায়ের কাছে বহুবার কচুর লতির এই অসাধারণ স্বাদের পাতুরি খেয়ে খেয়ে এখন নিজেও মাঝে মাঝেই এটা বানাই। আহা! গরম ভাতের সঙ্গে একটু লতি পাতুরি যা কিনা বর্তমানে আমার এপার বাংলার বরের জিভের স্বাদকোরককেও চনমনে করে তোলে।
উপকরণ:
কচুর লতি - ৫০০ গ্রাম
সর্ষের তেল - ৫ টেবিল চামচ
কালো জিরে - ১/২ চা চামচ
শুকনো লঙ্কা - ১টা
কাঁচা লঙ্কা - ৫/৬ টা
পেঁয়াজ কুচি - ২ চা চামচ
রসুন কুচি - ১/২ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো - ১ চা চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো - ১/২ চা চামচ
নারকেল কোরা - ৫ টেবিল চামচ
সর্ষে (সাদা+কালো) - ৩ টেবিল চামচ
পোস্ত - ২ চা চামচ
নুন, চিনি - স্বাদ অনুযায়ী
লেবুর রস - ২ টেবিল চামচ
জল - ভাপানোর জন্যে
পদ্ধতি:
প্রথমে কচুর লতিকে ১/২" মাপে কেটে বাইরের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে এবং তারপর সেগুলি কলের জলের নীচে রেখে খুব ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে জল ঝরিয়ে নিতে হবে।
এবার একটা বড়ো, গভীর পাত্রে ১ থেকে ২ লিটার মতো জলে লেবুর রস আর ১ চা চামচ নুন দিয়ে লতিটা ভাপিয়ে নিতে হবে।
অন্যদিকে, সর্ষে, পোস্ত, নারকেল কোরা আর কাঁচা লঙ্কা একসাথে নিয়ে একচিমটে নুন সহযোগে বেটে নিতে হবে।
এরপর কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে প্রথমে কালো জিরে ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচি ও রসুন কুচি দিয়ে ভাজতে হবে, খানিক ভাজা হয়ে এলে আঁচ কমিয়ে তাতে লতিটা দিয়ে হলুদগুঁড়ো এবং লঙ্কাগুঁড়ো মিশিয়ে ভাল করে কষাতে হবে। সবকিছু ভালোভাবে মিশে গেলে আঁচ বাড়িয়ে কড়াই ঢেকে দিতে হবে এবং মিনিট খানেক পর আঁচ কমিয়ে ঢাকনা খুলে দেখতে হবে; লতির একটা পিঠ একটু পোড়া পোড়া হয়ে গেলে স্বাদ অনুযায়ী নুন-চিনি মিশিয়ে অপর পিঠটাও একইরকমভাবে উল্টে দিয়ে আবারও আঁচ বাড়িয়ে ঢেকে দিতে হবে।
সবশেষে, পাতুরি তৈরি হয়ে গেলে উপরে কাঁচা সর্ষের তেল ছড়িয়ে ধোঁয়া ওঠা ভাতের সঙ্গে এই অতীব সুস্বাদু পদটি গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
Comments
Post a Comment