মানকচু বাটা



পুরনো দিনের গ্রাম বাংলার মূলতঃ পূর্ববঙ্গের নানা সুস্বাদু রান্নার মধ্যে একটি হলো এই "মানকচু বাটা" যা অত্যন্ত সহজ, সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারীও বটে। বাঙালের মেয়ে হওয়ায় ছোট থেকেই বাড়িতে নানারকম বৈচিত্র্যময় আর সুস্বাদু রান্নাবান্না দেখে ও চেখে বেড়ে উঠেছি এবং বর্তমানে নিজেও নিজের সংসারে সেই ধারাই অক্ষুণ্ন রেখেছি। ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের সঙ্গে খানিকটা মান-বাটা/মানকচু বাটা পাওয়া মানেই একথালা স্বর্গসুখ তাই একে আর আলাদা করে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশন করার কোনো দরকারই পড়েনা।

এটা মূলতঃ কাঁচাই বেটে খাওয়া হয় তবে কেউ চাইলে এই বাটাটা তেল-ফোড়নে সাঁতলে নিয়েও খেতে পারেন তাই নীচে আমি দু'টো পদ্ধতিই লিখে দিলাম।


উপকরণ: (মূল পদ্ধতির জন্যে)

মানকচু - ২০০ গ্রাম, 

সরষে বাটা - ২ টেবিল চামচ, 

নারকেল কোরা - আধ কাপ,  

কাঁচালঙ্কা ২/৩ টি,

রসুনের কোয়া - ২/৩টি

নুন - স্বাদমতো, 

সরষের তেল - ১ টেবিল চামচ,

লেবুর রস - ১/২ চা চামচ (গলা ধরার ভয় থেকে বাঁচতে)।


(মূল পদ্ধতির পর সাঁতলানোর জন্যে)

কালোজিরে - ১/২ চা চামচ, 

শুকনোলঙ্কা - ১টা,  

হলুদ - ১ চা চামচ, 

লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২ চা চামচ,

আদার পেস্ট - ১/২ চা চামচ

নুন - স্বাদমতো।





পদ্ধতি:

মানকচু ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর কচুটাকে ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে গ্রেটার দিয়ে কুরিয়ে নিতে হবে বা খুব ছোট ছোট টুকরোয় কেটে নিতে হবে। 

এবার শিলনোড়া বা মিক্সিতে(যার যেটায় সুবিধা) সরষে বাটা, নারকেল কোরা, কাঁচালঙ্কা, রসুনের কোয়া ও নুন দিয়ে কচুটাকে খুব ভালো করে বেটে নিতে হবে।

এরপর ওতে লেবুর রস দিয়ে আরও একবার একদম মিহি করে বেটে নিয়ে উপরে কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে গরম ভাতে মেখে অল্প অল্প করে মুখে তুলে আস্বাদন করতে হবে। 


(সাঁতলানোর জন্যে):

কারোর যদি গলা ধরার ভয়ে বা অন্য যে কোন কারণে কাঁচা মান-বাটা খেতে অসুবিধা লাগে তাহলে উপরে লেখা মূল পদ্ধতি অনুসরণ করে কচুটা বেটে নেওয়ার পর কড়াইতে কিছুটা সর্ষের তেল গরম করে নিতে হবে। এরপর ধোঁয়া ওঠা গরম তেলে কালোজিরে, শুকনোলঙ্কা ফোড়ন দিয়ে ওতে আদার পেস্ট হলুদ, নুন ও লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। ভালো করে কষানো হয়ে গেলে ওর মধ্যে আগে থেকে বেটে রাখা কচুটা দিয়ে নেড়েচেড়ে সব একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে এবং সবটা একেবারে মাখা মাখা হয়ে এলে নামিয়ে নিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।

Comments